Sunday, March 3, 2013

ছাঁয়া কন্যার শান্তির ছাঁয়া


আমি যখন মারা গেলাম তখন সন্ধ্যা ৭টার কিছু বেশি । আকাশটা ধুসর নীল । বিকাল থেকে বুক ব্যাথা করতেছিলো । হঠাৎ করে চলে গেলাম দূনিয়া থেকে ।
আমার আত্মাটা এখনো ঘরের ভেতর আছে । প্রিয়জনরা কাঁদছে দেখলাম । সারা বিশ্ব জেনে গিছে । চারদিক খবর পাঠানো হয়েছে । গ্রামের বাড়ী মানুষ পাঠানো হয়েছে পারিবারিক কবরাস্থানে সাড়ে ৩ হাত মাটি খোড়ার জন্য ।পারিবারিক মানুষ আসা শুরু করেছে বাসায় । আমার লাশকে একটু পর গোছল করাবে শুনলাম । মসজীদ থেকে খাটিয়া আনছে । হুজুর আসছে ।

রাত ১২টা কয়েক মিনিট । কে যেনো বললো ফজরের নামাজের পর কবর দেওয়া হবে । এর মধ্যে পরিবারের মানুষ এসে যেন শেষবারের মত আমার মুখটা দেখতে পায় ।
আমার শরীরকে গোছল দেওয়া হলো । সাদা কাপড় পড়ানো হয়েছে । ধুপের গন্ধ বের হচ্ছে । গোলাপ জল ছিটালো কে যেনো ।
এতজন ছেড়ে আমাকে চলে যেতে হবে । খারাপ লাগছে । খুবই খারাপ । কান্না আসার মত খারাপ । আমার এক বন্ধু রেগে গেলে কান গরম হয়ে যায় । আরেকটু ফর্সা হলে হয়ত লাল হয়ে যেতো । দরকার নাই ফর্সা হওয়ার । যেমন আছে তেমনই ভালো । আযান দিছে ফজরের শুনলাম । কি মধুর কন্ঠ ।
আমকে আরেকটু পর খাটিয়াতে উঠাবে । আমি মাটির নিচে থাকবো কি করে ? আমার তো দম বন্ধ হয়ে যাবে । সাপ আসবে । উফফ , চিন্তা করতে চাচ্ছি না ।
. . . আমাকে কবর দিয়ে সবাই চলে গিয়েছে । আমার পেট ব্যাথা করছে । ভয় পেলে পেট ব্যাথা করে ।
. . . কয়েকদিন পরের কথা . . . আকাশে চাঁদনী রাত । ঐ গাছটার পাতার ফাক দিয়ে আলো পড়েছে আমার কবরের উপর । হঠাৎ একটা ছায়া পড়লো কবরের উপর । ছায়া কন্যার ছায়া । আমি জানতাম সে আসবে ।

আমি এভাবেই ঘুমিয়ে থাকবো । ছায়াকন্যার শান্তির ছায়ায় চিরকাল . . .

No comments:

Post a Comment