আমি চায়ের কাপে একটা লম্বা চুমুক দিলাম। কাপে চুমুক দেয়ার সময় শব্দটা মনে হয় বেশী হয়ে গেছে। পাশে বসা ভদ্রলোক আমার দিকে ঘুরে তাকালেন। তার দৃষ্টিতে "এ আবার কোথা থেকে এসেছে এমন একটা ভাব। আমি তার দৃষ্টি উপেক্ষা করে পরের বার আরও জোরে শব্দ করে চুমুক দিলো। ভদ্রলোকের ভদ্রতা এই শব্দে হুড়হুড় করে ভেঙ্গে পড়ছে। সে চায়ের বিল দিয়ে উঠে চলে গেল।
এই সময়টাতে লোকজন তেমন একটা আসেনা। চায়ের সাথে সাথে এখানে পান আর বিড়ি- সিগারেট বিক্রি করা হয়। যে চা বানাচ্ছে তার মুখে বসন্তের দাগ। পাখি উড়ে চলে গেছে কিন্তু তার চিহ্ন রেখে গেছে। লোকটার নাম কি হতে পারে। আচ্ছা আন্দাজ করি, লোকমান হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী।
একবার এক রিকশাওয়ালার সাথে পরিচয় হয়েছিল, তার মুখেও বসন্তের দাগ ছিল, তার নাম ছিল লোকমান। হয়তো এ কারনেই মনে হচ্ছে এর নামও লোকমান হবে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তার নাম কি।
" আশরাফ চৌধুরী । নাম জিজ্ঞেস করলেন , কোন মতলব আছে নাকি।"
"না,এমনি। চৌধুরী সাহেবের বাড়ি কোথায়।"
"মানিকগঞ্জে, আমাদের আবার চৌধুরী বংশ। কিন্তু কপালে লেখা ছিল চা বানাবো, তাই চা বানাচ্ছি। কিন্তু ভাইজান ছেলেমেয়ে গুলারে ইশকুলে দিছি। মাশাল্লাহ লেখাপড়ায় খুবই ভালো। "
"হুম, শুধু নামে চৌধুরী হলে হবেনা, কাজেও হতে হবে। চা তো
ভালই বানাও। আর এক কাপ দাও।"
"জী ভাইজান দিচ্ছি। ভাইজান আফনের নামটা ?"
"হিমু।"
"কোন বংশের?"
"বংশ নাই। নির্বংশ।"
একবার এক রিকশাওয়ালার সাথে পরিচয় হয়েছিল, তার মুখেও বসন্তের দাগ ছিল, তার নাম ছিল লোকমান। হয়তো এ কারনেই মনে হচ্ছে এর নামও লোকমান হবে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম তার নাম কি।
" আশরাফ চৌধুরী । নাম জিজ্ঞেস করলেন , কোন মতলব আছে নাকি।"
"না,এমনি। চৌধুরী সাহেবের বাড়ি কোথায়।"
"মানিকগঞ্জে, আমাদের আবার চৌধুরী বংশ। কিন্তু কপালে লেখা ছিল চা বানাবো, তাই চা বানাচ্ছি। কিন্তু ভাইজান ছেলেমেয়ে গুলারে ইশকুলে দিছি। মাশাল্লাহ লেখাপড়ায় খুবই ভালো। "
"হুম, শুধু নামে চৌধুরী হলে হবেনা, কাজেও হতে হবে। চা তো
ভালই বানাও। আর এক কাপ দাও।"
"জী ভাইজান দিচ্ছি। ভাইজান আফনের নামটা ?"
"হিমু।"
"কোন বংশের?"
"বংশ নাই। নির্বংশ।"
আমি চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছি। আমার ক্ষমতা মনে হয় কমে যাচ্ছে। না হলে চা ওয়ালার নামটা আমার অনুমান মত হওয়া উচিত ছিল।
এটা কিসের জন্য হচ্ছে আমি তাই ভাবছি। হুমায়ূন স্যার নেই এ জন্য?
না স্যার বেঁচে থাকলে কথাটা জিজ্ঞেস করা যেতো। বুঝতে পারছিনা আমার ভবিষ্যৎ কি হবে। এই যে আমি হিমু, এই যে আমার অস্তিত্ব, এইগুলো কি থেমে থাকবে। আমি চিরকাল এই অল্পেই সীমাবদ্ধ থাকবো।
হুমায়ুন স্যার যদি আমাকে মেরে ফেলতেন তাহলে এই সমস্যাটা হতনা। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়,
"হিমু মরিয়া প্রমান করিল, সে বাঁচিয়া আছে।"
এটা কিসের জন্য হচ্ছে আমি তাই ভাবছি। হুমায়ূন স্যার নেই এ জন্য?
না স্যার বেঁচে থাকলে কথাটা জিজ্ঞেস করা যেতো। বুঝতে পারছিনা আমার ভবিষ্যৎ কি হবে। এই যে আমি হিমু, এই যে আমার অস্তিত্ব, এইগুলো কি থেমে থাকবে। আমি চিরকাল এই অল্পেই সীমাবদ্ধ থাকবো।
হুমায়ুন স্যার যদি আমাকে মেরে ফেলতেন তাহলে এই সমস্যাটা হতনা। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়,
"হিমু মরিয়া প্রমান করিল, সে বাঁচিয়া আছে।"
অমরত্ব ব্যাপারটা অনেক সময় বিরক্তিকর হয়ে দাড়ায়। পৃথিবীতে অবিনশ্বর বলতে কিচ্ছু নেই। আমি হিমু কোন ছার।
আমার যেহেতু একটি সুন্দর প্রক্রিয়ায় জন্ম হয়েছে। বাবার স্নেহে বেড়ে উঠেছি। মায়ের স্নেহ না পেলেও তার অস্তিত্ব আমি অনুভব করেছি। সব সময় মনে হত মা আছেন আমার আশেপাশেই।
আচ্ছা রূপার কি হবে। তার অপেক্ষা কি অনন্তকালের জন্য, এটা কি শেষ হবেনা? হয়তো আর রূপার সাথে আমার জোছনা দেখা হবেনা। টেলিফোনে অকারনে রূপার সাথে কথা বলতে পারবোনা , এটা মেনে আমার জন্য কষ্টকর , যদিও আমি একজন মহাপুরুষ।
সবকিছুরই একটি পরিণতি প্রয়োজন। শুভ সমাপ্তি বলা যায় যাকে। ধরা যাক হিমু সুইসাইড করে ফেললো। কিভাবে করবো সেটা অবশ্য চিন্তার বিষয়। বিষ খেয়ে মরা যায়, পুরাতন রীতি অনুযায়ী ফ্যানের সাথেও ঝুলে পরতে পারি।
অবশ্য মহাপুরুষদের মৃত্যু হয়না। তারা দেহত্যাগ করেন। একটা সময় এসে তাঁরা মনে করেন যে তাঁরা তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করতে পেরেছেন । তখন তাঁরা একটি শুভক্ষণ দেখে বিদায় নেন। ভক্তদের চোখের জল, পৃথিবীর মায়া কোন কিছুই তাঁদের আটকাতে পারেনা। আচ্ছা আমার দায়িত্ব কি? আমি কি তা সঠিক ভাবে পালন করেছি?
না আমি হিমু , সব কিছুর বাইরে। দায়িত্ব, বন্ধন সবকিছু থেকে আমি মুক্ত। আমার দায়িত্ব ছিল সৌন্দর্যের অনুসন্ধান করা। আমি করেছে , আর এই জোছনা , এই পানি, এই মধ্যদুপুরের মায়া আমি কাটিয়ে উঠতে পারবোনা। আমি এদের মাঝেই থাকতে চাই।
যেদিন সব মায়া কাঁটিয়ে উঠতে পারবো ,সেদিন আমি বিদায় নেবো। আমার পায়ের চিহ্ন আর পড়বেনা এই রাস্তায়।
যেদিন সব মায়া কাঁটিয়ে উঠতে পারবো ,সেদিন আমি বিদায় নেবো। আমার পায়ের চিহ্ন আর পড়বেনা এই রাস্তায়।
No comments:
Post a Comment