পর্ব ১ ।। বৃহদ্রথ
তিনি হাঁটা শুরু করলেন । অরন্য পেরিয়ে দূরে, আরও দূরে । গভীর মরুভূমির পথে । হাঁটতে হাঁটতে পা তাঁর রক্তাক্ত । উদ্ভ্রান্ত চোখের দৃষ্টি । ঘামে-ক্লেদে জর্জরিত সারা শরীর । জ্বলন্ত সূর্যরশ্মি মাথায় নিয়ে তিনি উন্মাদের ন্যায় উলঙ্গ অবস্থায় উত্তপ্ত মরুভূমির বুকে ধ্যান শুরু করলেন । এ অবস্থায় তাঁকে দেখে কে বলবে এ সম্রাট ? এ বৃহদ্রথ ? শক্তিশালী মগধ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা স্বয়ং আজ প্রায়শ্চিত্তের তাড়নায় জলন্ত সূর্যের দিকে হাত বাড়িয়ে সম্পন্ন করছে তাঁর কঠিন তপস্যা !
মহাভারত ও পুরান অনুযায়ী, এই বৃহদ্রথই মগধ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা । তিনি বসু চৈদ্য উপারিচারার পুত্র । বৃহদ্রথের বর্ণনা দিতে গিয়ে ঐতিহাসিক রামেশ মেনন লিখেছেন, “ভারতবর্ষে বৃহদ্রথের খ্যাতি ছিল পৃথিবীর বুকে পড়া সূর্যের আলোর মতই” । তিনি ভুল কিছু বলেননি । বৃহদ্রথের সমগ্র জীবনটাই যেন একটা কল্পিত উপন্যাস ।
মগধ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা, বৃহদ্রথ
সম্রাট বৃহদ্রথের শক্তি ও সাহস ছিল অবিসংবাদী । মহাভারতের বর্ণনা অনুসারে, চৈত্যক পর্বতে তিনি একাই বৃষরূপধারী মাংসাশী দৈত্যকে বধ করেন । তারপর তার চামড়া ও নাড়ি দিয়ে তিনটি ভেরী প্রস্তুত করানো হয় । ভেরী তিনটিকে চৈত্যক পর্বতেই স্থাপন করা হয় । তার সৈন্যদল ছিল সুবিশাল । এতে ৩ লাখ ৩০ হাজার পদাতিক সৈন্য, ২ লক্ষ ঘোড়া, ৬৫ হাজার হাতি, ৬৫ হাজার রথ, ৬৫ হাজার চতুরঙ্গসেনা বিশিষ্ট বাহিনী অন্তর্ভুক্ত ছিল ।
বৃহদ্রথ কাশীর যমজ রাজকন্যাদ্বয়কে বিয়ে করেছিলেন । এই দুই রাজকন্যার সৌন্দর্য ছিল কীংবদন্তীতূল্য । রাজা এদের বর দিয়েছিলেন, দুজনকে সবসময় সমান দৃষ্টিতে দেখবেন ।
বৃহদ্রথ তাঁর রাজ্যকালে নিজের সব ইচ্ছাই পূরণ করে যেতে পেরেছিলেন । কেবল একটি বাদে । তাঁর কোন পুত্রসন্তান ছিল না । পুত্রলাভের আশায় তিনি যজ্ঞের পর যজ্ঞ করতে লাগলেন । বিফলমনোরথ হয়ে শেষ পর্যন্ত প্রচন্ড হতাশাবোধ থেকে রাজা বৃহদ্রথ সংসারধর্ম ত্যাগ করেন । তিনি ভেবেছিলেন, নিশ্চয়ই তাঁর জীবনে অজ্ঞানে তিনি এমন কোন পাপ করেছেন যেকারনে তাঁর পুত্র হচ্ছে না । তাই তিনি প্রায়শ্চিত্তের পথ বেছে নেন । নগ্ন অবস্থায় কঠিন তপস্যায় লীন হন মরুভূমির উত্তপ্ত বালির ওপর ।
এইভাবে তপস্যার এক হাজার দিবস অতিক্রান্ত হল । বৃহদ্রথ নড়লেন না । তিনি এভাবেই প্রানত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন । সৌভাগ্যবশতঃ মুনি শাক্যন্য ঐ পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন । রাজা বৃহদ্রথ সামান্য একজন মুনির পায়ের ওপর ঢলে পড়লেন । মিনতি করে বললেন, ‘আমি জলবিহীন কূপের দাদুরি । মহামান্য ! আমায় জলের সন্ধান দিন !’ তাঁর চোখের জল মুনিকে অবাক করলো ।
মুনি বৃহদ্রথকে চন্ডকৌশিকের আশ্রমে নিয়ে গেলেন । রাজা বৃহদ্রথ ঐ আশ্রমে আত্মপরিচয় গোপন করে একজন সাধারন পুরুষের মত জীবনযাপন করতে থাকেন । তিনি চন্ডকৌশিকের নিকট কিছুই প্রার্থনা করলেন না । চন্ডকৌশিকের সেবা করাই মগধের এতো বড় রাজার জীবনের মূল উদ্দেশ্য হয়ে পড়ে ।
একদিন আমগাছের ছায়ায় ধ্যানরত অবস্থায় চন্ডকৌশিকের কোলের উপর একটা পাকা আম পড়লো । বৃহদ্রথ কাছেই বসে ছিলেন । চন্ডকৌশিক বৃহদ্রথকে ডেকে আমটিকে মন্ত্রসিদ্ধ করে তার হাতে তুলে দিয়ে বললেন, “বৎস ! এই আমটি তোমার স্ত্রীকে খাইয়ে দিও । তার একটি পুত্র হবে । এখন তুমি নিজ রাজ্যে ফিরে যাও । তোমার স্থান আশ্রম নয় । তোমার স্থান মগধের সিংহাসনে ।”
বৃহদ্রথ খুশীমনে নিজ রাজ্যে ফিরে এলেন । কিন্তু দুই যমজ স্ত্রীদের হাতে একটি আম তুলে দিতে গিয়ে তিনি স্ত্রীদের দেয়া বরের কথা মনে করে দ্বিধাবিভক্তিতে পড়লেন । শেষে আমটিকে দ্বিখন্ডিত করে রানীদের হাতে তুলে দিলেন । এরপর সত্যি সত্যিই দুই রানী গর্ভবতী হলেন । পরবর্তীতে দশম মাসের এক পূর্ণিমা রাত্রির মধ্যভাগে প্রত্যেকের একটি করে পুত্রসন্তানও হয় । দূর্ভাগ্যক্রমে দুটি রাজপুত্রই অর্ধ অঙ্গ নিয়ে জন্মগ্রহন করে । এ যেন একটি শিশুরই দুটি খন্ডিত মাংসপিন্ড । প্রত্যেকটির একটি করে চোখ, একটি হাত, একটি পা, পেট-নিতম্ব আর মুখ অর্ধেকটা আছে, অর্ধেকটা নেই । দুটিই নিথর, মৃত ও বীভৎস । নবজাতকের পরিচর্যার জন্য কাশী থেকে আনা দুইজন পরিচারিকা ভয়ে ভয়ে বৃহদ্রথকে না জানিয়েই সন্তানদুটিকে দুটি পৃথক রেশমী কাপড়ে পেঁচিয়ে বাগানে ফেলে দিয়ে এলো ।
বৃহদ্রথ এই ঘটনা জানতে পেরে প্রবলভাবে মুষড়ে পরলেন । সবচে অলৌকিক ঘটনাটি তখন ঘটে ।
জরা নামে এক তাম্রবর্ণী রাক্ষসী মাংসের গন্ধ পেয়ে ক্ষুধার্ত অবস্থায় সেখানে এলো । রেশমী কাপড়ের পোঁটলা দুটি খুলে সেও অবাক হয়ে যায় । এমন অদ্ভুত মানব সন্তান আগে সে কখনো দেখেনি । খাওয়ার আগে সে দুটি মাংসপিন্ডকে একত্র করে একবার দেখতে চেষ্টা করে । তার দেখার ইচ্ছা খন্ডদুটি মিলিত অবস্থায় কেমন দেখায় । খন্ডদুটিকে পাশাপাশি রাখবার সাথে সাথে জরা নিজেই ভয় পেয়ে যায় । হঠাৎ করে পিন্ডদুটির ভার এতোই বেশী হয়ে যায় যে তার হাতের ওপর ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ে ।
জরার ক্ষুধা যেন উবে গেল । বিস্ফোরিত চোখে সে দেখলো, অলৌকিকভাবে শরীর খন্ড দুটি একটি আরেকটির সাথে জোড়া লেগে গেছে ! বাচ্চাটি মেঘস্বরে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো । চিৎকার শুনে রাজা বৃহদ্রথ ও অন্যান্যরা এসে এই অলৌকিক ঘটনার অবতারনা দেখে চমকে যান ।
ঠিক তখন মুনি চন্ডকৌশিক আবির্ভূত হলেন । তিনি শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে বৃহদ্রথকে বলেন, “তোমার পুত্র সাধারন কেউ নয় । বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এর মধ্যে অলৌকিক ক্ষমতা দেখা দিতে থাকবে । সে পৃথিবীর অন্যতম শক্তিশালী রাজাদের একজন হবে । সে হবে অপরাজেয় । না দেবতা, না অসুর- কেউই তোমার পুত্রকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করতে পারবে না । সে তার সময়ের সবচে’ বড় শিবভক্ত হবে । এবং শিব তাঁর মঙ্গল করবেন । যেহেতু রাক্ষসী জরা তোমার পুত্রকে সংযোজিত করেছে তাই এর নাম হবে জরাসন্ধ !”
চন্ডকৌশিকের ভবিষ্যদ্বানী সত্য হয় । মহাভারতে জরাসন্ধের শক্তি ও প্রতাপের বর্ণনা দিতে গিয়ে বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণ পর্যন্ত স্বীকার করে নেন,
“... তিনশ বৎসর যুদ্ধ করেও আমরা জরাসন্ধের সেনা সংহার করতে পারবো না ।”
“... জরাসন্ধ একটি গদা নিরানব্বইবার ঘুরিয়ে গিরিব্রজ থেকে মথুরার দিকে নিক্ষেপ করেন । সেই গদা নিরানব্বই যোজন দূরে পতিত হয় । মথুরার নিকটবর্তী সেই স্থানের নাম গদাবসান ।”
[মন্ত্রপর্বাধ্যায়, সভাপর্ব]
[মন্ত্রপর্বাধ্যায়, সভাপর্ব]
“... সুরাসুরও সম্মুখযুদ্ধে তাকে জয় করতে পারেন না । কাজেই মল্লযুদ্ধেই তাকে মারতে হবে ।”
[জরাসন্ধবধপর্বাধ্যায়, সভাপর্ব]
[জরাসন্ধবধপর্বাধ্যায়, সভাপর্ব]
মহাভারতেও এও বলা আছে, জরাসন্ধ শিবের সাক্ষাৎ দর্শন পেয়েছিলেন । সে শিবকে সন্তুষ্ট করার জন্য ১০০ ক্ষত্রিয় রাজাকে একসঙ্গে শিবের উদ্দেশ্যে বলি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল । শিবের বরপ্রাপ্তির ফলে সে ৮৬ জন রাজাকে বন্দী করে ফেলতে পেরেছিল । যদিও শেষপর্যন্ত তার উদ্দেশ্য সফল করতে পারে নি সে । কৃষ্ণ, ভীম ও অর্জুন এইসব বন্দী রাজাদের মুক্ত করেন ।
জরাসন্ধ ভীমের সঙ্গে মল্লযুদ্ধের এক পর্যায়ে মারা যান । কৃষ্ণ তাঁকে ছল-চাতুর্যের মাধ্যমে ভীমের সাথে পরাজিত করানোর প্রয়াস নেন । এবং এর ফলেই পরিশেষে ভীম তার দুই পা ধরে শরীরের মধ্যম বরাবর টেনে তার শরীরটাকে দুই ভাগে চিঁড়ে ফেলেন । এভাবে জন্মাবস্থার ন্যায় পুনরায় দ্বিখন্ডিতরূপেই জরাসন্ধের করুণ মৃত্যু হয় ।
ভীমসেন জরাসন্ধকে দ্বিধাবিভক্ত করছেন, শিল্পীর আঁকা ছবি
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর ‘কৃষ্ণচরিত্র’ গ্রন্থে অনুমান করেছেন, জরাসন্ধের মৃত্যু কৃষ্ণের ছলনায় হয়নি । কিছু কুম্ভীলক তাদের নিজেদের লেখা শ্লোক মহাভারতে ঢুকিয়ে রচিত আসল ইতিহাসকে বিকৃত করেছে ।
জরাসন্ধের দুই কন্যা অস্ত্বি ও প্রাপ্তি মথুরার শাসক কংসের স্ত্রী ছিল । তার পুত্র সহদেব পরে সিংহাসনে বসলেও পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে পারে নি ।
বাংলা সাহিত্যে ‘জরাসন্ধ’ চরিত্রটি ঘুরেফিরে বহু ক্ষেত্রে এসেছে । ‘লৌহ কপাট’ উপন্যাসের লেখক চারুচন্দ্র চক্রবর্তী ‘জরাসন্ধ’ ছদ্মনামে লিখতেন । শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের বিখ্যাত একটি কবিতা আছে ‘জরাসন্ধ’ নামে । যদিও সেটি এই জরাসন্ধকে নিয়ে নয় ।
* জরাসন্ধের জন্মের কাহিনীটি ভগবতপুরান ও মহাভারত অনুসারে বর্ণিত ।
** মগধঃ মগধের পুরাতন রাজধানী ছিল গিরিব্রজ বা পুরাতন রাজগৃহ । কুটদন্ডসূত্রে রাজগৃহকে ‘সমৃদ্ধ পূন্যভূমি’ হিসেবে উল্লেখ করা আছে । মহাভারতে এই নগরীকে ‘মগধের গিরিভজঃ’ নামে বর্ণনা করা আছে । মহাভারত অনুযায়ী, গিরিব্রজ, রাজগৃহ, বৃহদ্রথপুর, মগধপুর ও –এই পঞ্চপর্বত ‘মগধের গিরিভজঃ’কে অভেদ্য ও সুরক্ষিত করে ঘিরে রেখেছে । রামায়নে গিরিব্রজকে উল্লেখ করা হয়েছে ব্রহ্মার পুত্র বসুর নামানুসারে গিরিব্রজ বসুমতী নামে পরিচিত হয় । হিউয়েন সাং এর বর্ণনা মতে এর নাম ছিল, ‘কুশাগ্রপুর’ । রাজা বৃহদ্রথের বংশধরেরা কয়েক শতাব্দী রাজত্ব করার পর কুশাগ্র নামে নাকি এক রাজা আসেন । তিনিই নিজের নামে রাজ্যের নাম রাখেন । চনকপুরী, বিম্বিসারপুরী ইত্যাদি নামও শোনা যায় । বর্তমানে এই নগরীর নাম রাজগীর ।
বৈদিক সাহিত্যে প্রামগন্ধা ছাড়া মগধের অন্য কোন রাজার নাম উল্লেখ নেই । যক্ষের ঘোষনামতে প্রামগন্ধা ‘কিকট’ নামের অনার্য সাম্রাজ্যের রাজা হয়েছিলেন, এমন বিবরণ ঋগ্বেদে পাওয়া গেছে । পুরান’গুলিতে আবার এই কিকট সাম্রাজ্যকেই ‘মগধ’ রূপে বর্ণনা করা হয়েছে । বৃহৎধর্ম পুরান মতে, কিকটের অবস্থান ছিল গয়ার কাছেই । তবে, কিকট-ই যে মগধ তা প্রমাণের জন্য এই সব যুক্তিই বেশ নড়বড়ে । ‘মগধ’ নামটি সরাসরি প্রথম পাওয়া যায় অথর্ববেদে । যুজুর্বেদেও ‘মগধের কবিগণ’ নিয়ে আলোচনা করা আছে ।
দায়মুক্তিঃ
খ্রীষ্টের জন্মেরও প্রায় ছয়শ বছর আগের ভারতবর্ষ কেমন ছিল
? কেমন ছিল আমাদের এই বাংলাদেশটি
? কেমন ছিল সেখানকার অধিবাসীরা
? তাদের চিন্তাধারা-জীবনযাপন পদ্ধতি কেমন ছিল
? রাজারা কেমন ছিলেন
?
এসব প্রশ্নে মনে জাগাটা অস্বাভাবিক নয় । তবে উত্তর খুঁজে পাওয়াটা কঠিন ব্যাপার । ইতিহাস ছলনা করতে পছন্দ করে । ঐতিহাসিকগণ একে অপরের যুক্তি মানতে চান না, কষ্ট হয় আমাদের – সাধারন কৌতুহলী পাঠকদের । আমি এক্ষেত্রে কল্পনা করে নিতে পছন্দ করে । ‘ইমপারফেক্ট’ মানেই যে ‘খারাপ’ তা-তো না । ‘মগধ সাম্রাজ্যঃ পুরাণে বর্ণিত রহস্যাবৃত যুগ’ লেখায় আমি উত্তরগুলো খুঁজে বেড়িয়েছি ।
এসব প্রশ্নে মনে জাগাটা অস্বাভাবিক নয় । তবে উত্তর খুঁজে পাওয়াটা কঠিন ব্যাপার । ইতিহাস ছলনা করতে পছন্দ করে । ঐতিহাসিকগণ একে অপরের যুক্তি মানতে চান না, কষ্ট হয় আমাদের – সাধারন কৌতুহলী পাঠকদের । আমি এক্ষেত্রে কল্পনা করে নিতে পছন্দ করে । ‘ইমপারফেক্ট’ মানেই যে ‘খারাপ’ তা-তো না । ‘মগধ সাম্রাজ্যঃ পুরাণে বর্ণিত রহস্যাবৃত যুগ’ লেখায় আমি উত্তরগুলো খুঁজে বেড়িয়েছি ।
বিদেহরাজ্যের পতনকাল থেকে মগধ সাম্রাজ্যের উত্থানের সময়টুকুকে ঐতিহাসিকরা
‘ষোড়শ মহাজনপদের যুগ’
বলে ডাকেন । ১৬টি মহাজনপদে বিভক্ত ছিল তখন এখনকার এই ভারতবর্ষঃ
১। কাশী
২। কোশল
৩। অঙ্গ
৪। মগধ
৫। বজ্জি / বৃজিসংঘ (বৈশালী গণরাজ্য)
৬। মল্ল / মালব
৭। চেদী
৮। বংশ বা বৎস
৯। কুরু
১০। পাঞ্চাল
১১। মৎস্য
১২। শুরসেন
১৩। অস্মক
১৪। অবন্তী
১৫। গান্ধার
১৬। কম্বোজ
২। কোশল
৩। অঙ্গ
৪। মগধ
৫। বজ্জি / বৃজিসংঘ (বৈশালী গণরাজ্য)
৬। মল্ল / মালব
৭। চেদী
৮। বংশ বা বৎস
৯। কুরু
১০। পাঞ্চাল
১১। মৎস্য
১২। শুরসেন
১৩। অস্মক
১৪। অবন্তী
১৫। গান্ধার
১৬। কম্বোজ
প্রশ্ন উঠতেই পারে বাকী ১৫টি মহাজনপদকে পেছনে রেখে প্রথমেই মগধ’কে নিয়ে লেখার কারন কি
? কারন একটাই । খ্রীষ্টপূর্ব ছয় শতকে বাংলা-বিহার
(বর্তমান পাটনা ও গয়া জেলা)
নিয়ে গড়ে ওঠা জনপদটির নামই মগধ । আরাকান
(বর্তমানে চট্টগ্রামের কিছু অংশ)
ছিল মগধের রাজ্য । প্রাচীনকাল থেকেই আরাকানীরা
‘মগ’
নামে পরিচিত । বাংলাদেশে আজও মগ উপজাতীদের পৈত্রিক ভিটে রয়ে গেছে । তাই বলা চলে,
বর্তমান বাংলাদেশের বেশ খানিকটা জুড়েই মগধ সাম্রাজ্যের প্রভাব ছিল বিস্তৃত পরিসরে ।
তাছাড়া মগধ সাম্রাজ্যের রাজাদের ইতিহাসও বড় অদ্ভুত । ব্যক্তিগতভাবে আমি মগধরাজদের কাহিনী ও মিথ গোগ্রাসে গিলেছি । আমার কাছে ইতিহাসের চেয়ে অতিকথনগুলোকেই বেশী দামী বলে মনে হয়েছে । মজার গল্পগুলো একা পড়া যায় না । সবাইকে নিয়ে পড়তে হয় । এই সিরিজ লেখবার মূল উদ্দেশ্যও এটাই ।
No comments:
Post a Comment